ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সেচ খরচে সর্বোচ্চ বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, মে ০৩, ২০১৯

অপরিকল্পিত ব্যবহারের ফলে ক্রমেই নেমে যাচ্ছে পানির স্তর। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে গভীর নলকূপেও ঠিকমতো উঠছে না পানি। চলতি বোরো মৌসুমে সেচ প্রকল্পগুলো চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। পানির দুষ্প্রাপ্যতায় বেড়ে যাচ্ছে কৃষকের সেচ খরচ।

গত ১০ বছরে বোরো সেচে কৃষকের খরচ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। আর এ খরচ বিশ্বে সর্বোচ্চ! কৃষক সেচের পেছনে মোট উৎপাদন ব্যয়ের ৬২ শতাংশ অর্থ খরচ করে থাকে। সেচ খরচে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে থাইল্যান্ড। তারা সেচের জন্য ২৬ শতাংশ অর্থ ব্যয় করে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনাম সেচের পেছনে খরচ করে মাত্র ১৩ শতাংশ। সেচ সংকটের মধ্য দিয়েই সারা দেশে শুরু হয়েছে বোরো মৌসুম।

বিএডিসির হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রায় চার লাখেরও বেশি অগভীর নলকূপ অকেজো হয়ে আছে। ৪৮ জেলার ২১৩ উপজেলায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। ১৭ লাখ শ্যালো টিউবওয়েল কার্যকর। এসব টিউবওয়েল ২২ থেকে ২৪ ফুট মাটির নিচ থেকে পানি ওঠায়। কিন্তু এখন মাটির ২৪ ফুট নিচে গিয়েও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় কৃষক পাঁচ ফুট মাটি গর্ত করে সেখানে শ্যালো টিউবওয়েল বসাচ্ছে। এরপরও অনেক জায়গায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না।

ইউনিসেফ হুঁশিয়ার করেছে, বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নিরাপদ পানি সংকটে পড়বে কয়েক কোটি মানুষ। বিশেষ করে বন্যা ও খরাপ্রবণ এলাকার কয়েক কোটি শিশু পানি সরবরাহ এবং নিরাপদ পানি সংকটের মুখোমুখি হবে।

বিএডিসির বাংলাদেশ ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক দশক আগেও প্রতি হেক্টরে বোরো আবাদে সেচের খরচ ছিল চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু গত মৌসুমে তা ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। জ্বালানি খরচসহ অন্যান্য উপকরণ ব্যয় স্থির থাকলে ২০২০ সালে তা ২০ হাজার ছাড়াবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক কেজি বোরো উৎপাদনে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার লিটার পানি লাগে। এই পানি মাটির গভীর থেকে ওঠাতে প্রতি বিঘার জন্য প্রায় এক হাজার ৫০০ টাকা মালিকের খরচ হয়। কৃষকের খরচ হয় ২৮ ভাগ অর্থাৎ বিঘায় চার থেকে পাঁচ মণ ধান। কিন্তু প্রতিবছর পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে সেচের খরচ বাড়ছে। এতে ব্যবহার করতে হয় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বা ডিজেলের। ফলে প্রতি হেক্টরে সেচ বাবদ কৃষকের শতকরা ১৫-২০ শতাংশ খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

 
Electronic Paper