মেহেদি চাষে কৃষকের সাফল্যের হাসি
সাভার প্রতিনিধি
🕐 ৯:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০১৮
সাভারে বাড়ছে মেহেদি চাষ। ঈদ সামনে রেখে কেনাকাটা বেড়েছে। অনেক পরিবার মেহেদি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভারের উপজেলার রাজাসন, হেমায়েতপুর, ভার্কুতা, সালমাসি, ভরারীপাড়া, লুটেরচর, বাহেরচর, মাওয়ালীপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রতিবছরই বাড়ছে মেহেদি পাতার চাষ। খাদ্যশস্য উৎপাদনের পাশাপাশি চাষিরা নানা প্রজাতির ফুল ও লাভজনক ফসলের চাষে করেন।
সলমাসি বাহের চর গ্রামের করম আলী প্রায় এক যুগ ধরে চাষ করছেন মেহেদি পাতা। তিনি জানান, মেহেদি চাষে উৎপাদন খরচ কম। প্রতিমাসে কীটনাশক ছাড়া আর কোনো খরচ হয় না। একবার চারা লাগানোর পর গাছ বাঁচে ১০ থেকে ১৫ বছর। বছরে বাগান থেকে পাতা কাটা হয় তিনবার। খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয় বিঘাপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।
সরেজমিন দেখা যায়, মেহেদী বাগান থেকে পাতা সংগ্রহ করছেন চাষিরা। বাড়িতে বসে মেহেদি পাতার ডালের ছোট ছোট আঁটি বাঁধছেন। আমির হোসেন জানান, গত বছর পোকার আক্রমণে ফলন হয় কম। তবে এবার ভালো হয়েছে। গত বছর ঈদে ৫০-৬০টি মেহেদি পাতার আঁটি বিক্রি করেছেন ৫০০ টাকা। এবার ঈদের আগেই বিক্রি হচ্ছে আট থেকে নয়শ টাকা। এবার লাভ বেশি হওয়ায় চাষিরাও খুশি। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে মেহেদি চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে। তা ছাড়া বাজারে কেমিক্যাল মিশ্রিত মেহেদি আসায় প্রতিযোগিতার বাজারে তাদের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
লালমিয়া জানান, কৃষি কর্মকর্তারা কখনো তাদের খোঁজ রাখেন না। তারাই বেশি সমস্যার সম্মুখীন হলে নিজেরাই কর্মকর্তাদের কাছে যান। কিন্তু তাদের পরামর্শ ঠিক মতো কাজ না হলে, নিজেরাই মনমতো জমিতে সার ও কীটনাশক প্রদান করেন।
মোহাম্মদ আলাউদ্দীন বলেন, তার আড়াই বিঘা জমিতে মেহেদি গাছ রয়েছে। প্রতি মাসে খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকা। সপ্তাতে অন্তত দুবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। আমরা কষ্ট করে মেহেদি চাষ করি। কিন্তু বাজারে বিভিন্ন দেশের টিউব মেহেদির কারণে আমরা এখন বাজার পাচ্ছি না।
সাভার উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, সাভার উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে মেহেদির চাষ হয়। মেহেদি চাষ লাভজনক হওয়ায় চাষিদের মধ্যে তা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। মেহেদি চাষে খরচ খুব কম। মূলত এ কারণে প্রতি বছর কৃষকদের মেহেদি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তা ছাড়া এ এলাকায় মাটি মেহেদি চাষের জন্য উপযোগী। তিন চাষিদের মেহেদি চাষ সহায়তার আশ্বাস দেন।