ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কৃষকদের প্রলুব্ধ করছে টোব্যাকো কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৮:৫৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯

নিরবচ্ছিন্ন তামাক চাষে দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে ঝিনাইদহের ফসলি জমি। যা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তামাক চাষে বিভিন্নভাবে কৃষকদের প্রলুব্ধ করছে টোব্যাকো কোম্পানি। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অন্যদিকে বাড়ছে কৃষকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও। খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তারা।

যে জমিতে কিছুদিন আগেও ধান, গম, পাট ও সবজির আবাদ হতো এখন সেসব জমিতে অতি মুনাফার লোভে তামাক চাষ করছেন কৃষক।

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, তামাক চাষ ক্রমশ কমছে এ জেলায়। তামাক কোম্পানিগুলোর কৌশল ও লোভনীয় টোপে প্রতি বছর ফসলি জমি চলে যাচ্ছে তামাক চাষের আওতায়।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উদয়পুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, তামাক চাষে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিকভাবে পরিচিত কিছু ব্যক্তিকে কোম্পাণিগুলো ব্যবহার করছে।

স্থানীয় হওয়ায় এরা নানা কৌশলে কৃষকদের তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। ঝিনাইদহে তামাক চাষের সর্ববৃহৎ ক্রেতা হল বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি। কৃষকদের বিষবৃক্ষ তামাক চাষের জন্য বিশেষ সুযোগ দেখানো হয়। তামাক কোম্পানি সরাসরি জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে এবং একটি কার্ড দিয়ে থাকে।

স্থানীয়র জানান, তামাক চাষ অব্যাহত থাকলে কোম্পানির প্ররোচণায় দিনে দিনে অন্য ফসলি জমিও গ্রাস করে ফেলবে তামাক। অন্যান্য আবাদের চেয়ে তামাক চাষে আগাম টাকা প্রাপ্তি এবং লাভও তুলনামূলক বেশি হওয়ায় তামাকে জড়িয়ে পড়ছেন কৃষক। তামাক আবাদে ঝিনাইদহের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বেড়েই চলেছে।

শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অলোক কুমার সাহা বলেন, তামাক চাষে প্রাথমিকভাবে শিশু, কিশোর ও নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও খুব কম সময়ের মধ্যে বয়স্করাও ফুসফুস ও বক্ষব্যাধিসহ নানা অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হয়। চর্মরোগ ও এলার্জি জাতীয় সমস্যা বাড়তে থাকে। হাপানির মত মারাত্মক রোগ বাড়তে থাকে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক অফিস সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় তামাক চাষ কিছুটা ধীর গতিতে হলেও কমছে। গত মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলার ছয় উপজেলায় ৪৭৭ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল। তবে চলতি বছর তা কমে ৪২১ হেক্টর জমিতে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং গতবারের চেয়ে তামাক চাষ অনেকটাই কমে এসেছে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জি এম আবদুর রউফ বলেন, চাষিরা জেনে শুনেই শুধুমাত্র নগদপ্রাপ্তির আশায় বিষবৃক্ষ তামাকের চাষ করছেন। বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা তামাক চাষে এলাকার কৃষকদের প্রলুব্ধ করছে, নগদ আগাম সহায়তা দিচ্ছে। কখনও কখনও তারা রোগাক্রান্ত কৃষকদের চিকিৎসা সহায়তও দিয়ে থাকে বলে তিনি শুনেছেন। কৃষকের বীজ, সার থেকে শুরু করে বীজতলা পর্যন্ত তামাক কোম্পানির তত্ত্বাবধানে করা হয়।

 
Electronic Paper