ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শর্ষে ফুলে ভ্রাম্যমাণ মধু চাষ

ছাইফুল ইসলাম মাছুম
🕐 ১২:২৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০১৯

মধু, সুমিষ্ট ঘন তরল পদার্থ; যা ভেষজ গুণসম্পন্ন এবং সুপেয়। বাংলাদেশে বেশ কয়েক প্রকার মধু পাওয়া যায়। এর মধ্যে সুন্দরবন এবং নিঝুমদ্বীপের মধু নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকলেও বর্তমানে শর্ষে ফুলের মধু পিছিয়ে নেই। বিশেষ কারণে শর্ষে ফুলের মধুর রয়েছে আলাদা কদর।

এই মধু একটু লালচে রঙের এবং এর ঘনত্ব কম। স্বাদেও রয়েছে ভিন্নতা। সুন্দরবনে যেখানে পেশাদার মৌয়ালরা মধু সংগ্রহের জন্য জঙ্গলের গহীনে যান, সেখানে শর্ষে ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য শর্ষে ক্ষেতের পাশেই ঘাঁটি করেন মৌচাষীরা। এক ক্ষেতে ফুল শেষ হয়ে গেলে মৌমাছির কলোনি নিয়ে অন্য ক্ষেতে ছোটেন তারা। এভাবেই চলে তাদের ভ্রাম্যমাণ মধু সংগ্রহ। সারা দেশে এমন ভ্রাম্যমাণ মৌচাষীর সংখ্যা রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি। মৌচাষী মোকারম বিল্লাহ। বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায়। ২০১২ সাল থেকে তিনি মধু চাষ করছেন।

মধু চাষের বিষয়ে যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখন মৌমাছি ভর্তি বাক্স নিয়ে ঘুরে বেড়ান জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এলাকায়। যেখানে ফসলি জমিতে ফুল আছে, সেখানেই করেন আস্তানা।

মোকারম বিল্লাহর সঙ্গে কথা হয় জামালপুরের একটি সরিষা ক্ষেতে। মোকারম তিন কর্মচারীসহ থাকার জন্য জমির পাশেই স্থাপন করেছেন টঙঘর। জমিতে বসিয়েছেন ১৭৫টি মৌমাছির কলোনি (কাঠের তৈরি বিশেষ বক্স)। প্রতি কলোনিতে রয়েছে কয়েক হাজার মৌমাছির বসতি।

মোকারম বিল্লাহ জানান, জমিতে মৌমাছির মধু সংগ্রহের সময় নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। মধু সংগ্রহ করতে হয় ৬-৭ দিন পর পর। এলাকাভিত্তিক ফুলের নির্যাস অনুপাতে সময় কম-বেশি হয়। প্রতি বক্সে সপ্তাহে ৪-৫ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পারেন। সব কিছু অনুকূলে থাকলে এই মৌসুমে চার থেকে পাঁচ টন মধু সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানান তিনি।

অসুবিধার কথাও জানালেন মোকারম। তিনি বলেন, অনেক সময় আর্থিক সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ মধু সংগ্রহের সময় ছাড়া বাকি সময় মৌমাছিদের লালন করতে হয়। এতে প্রচুর খরচ হয়।

তিনি জানান, সাধারণ গ্রাহকরা বাজারে উচ্চমূল্যে মধু কিনলেও, সিন্ডিকেটের কারণে মধুচাষীদের নামমাত্র মূল্যে মধু বিক্রি করতে হয়। এসব বিষয়ে সরকারের কোনো খেয়াল নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ভবিষ্যতে নিজের মধু চাষের খামারকে আরও অধুনিক করতে কাজ করতে চান মোকারম। এখন সনাতন পদ্ধতিতে মধু চাষ করলেও, উন্নত দেশের মতো আরও প্রযুক্তি যুক্ত করতে চান তিনি।

 
Electronic Paper