জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শুকনো বীজতলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ০২, ২০১৯
জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শুকনা পদ্ধতিতে ধানের চারা উৎপাদন। এই পদ্ধতিতে ধানের চারা উৎপাদনে প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যেও বীজের অঙ্কুরোদগমের হার আশাতীত, চারাও সুস্থ্ থাকছে।ভালো মানের চারা উৎপাদন, উৎপাদন খরচ কম ও ফলন বেশি হওয়ায় এ পদ্ধতিতে ধানের চারা উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। অন্যদিকে সনাতন পদ্ধতির বীজতলার চারা উঠাতে গেলে গুচ্ছ শিকড় ছিড়ে যায় ফলে রোপনের পর গুচ্ছ শিকড় গজাতে অনেক সময় লাগে। তাই বর্তমান কৃষি কাজে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ পদ্ধতি।
কুয়াশা খুব বেশি থাকায় অনেক সময় বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করা হলে অর্ধেক বীজ কাদার ভেতরে থাকায় তা অঙ্কুরোদগম হতে পারেনা। এছাড়া বিভিন্ন পাখিও ধান খেয়ে ফেলে। ফলে অর্ধেকের বেশি বীজই বিফলে চলে যায়। যার কারণে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়। এ কারণে শুকনো বীজতলার দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
স্বল্প সময়ে ধানের সুস্থ্ ও সবল চারা উৎপাদনে এবং কুয়াশার কবল থেকে বাঁচাতে ভেজা (সেচ দেওয়া) বীজতলার চেয়ে শুকনো বীজতলা বেশি উপযোগী। এতে ফলন ভালো পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষকরাও। কৃষকরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করায় বোরো বীজ অঙ্কুরোদগমের হার কম হচ্ছে, চারাও ভালো হচ্ছে না। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে শুকনো বীজতলা পদ্ধতি অবলম্বন করে বেশ ভালো ফল পাচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশের একাধিক অঞ্ছলে এখন শুকনো বীজতলা পদ্ধতিতে আবাদ করছেন কৃষকরা। নরসিংদী জেলায় এই চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
নরসিংদী সদর উপজেলার আমদিয়া ইউনিয়নের কৃষক সারোয়ার মোল্লা বলেন, ‘আগে আমরা পানি সেচ দিয়ে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করতাম। কিন্তু গত বছর থেকে শুকনো বীজতলায় চারা উৎপাদন করছি। এতে বীজ ও চারা উভয়ই নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। বাড়তি কোনো সেচও দিতে হয় না বলে খরচ অনেকাংশে কম লাগে।’
শুকনো বীজতলা তৈরি করতে ১০ কেজি ধান দিয়ে ৩ শতকের জন্য খরচ হয় মাত্র ৩৬০০ টাকা। অপরদিকে সনাতন পদ্ধতিতে একই পরিমানের বীজতলা তৈরিতে খরচ হয় ৫,০৫০ টাকার মতো। আর শুকনো বীজতলার চারা ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে রোপণ করা সম্ভব হয়। আর সনাতন পদ্ধতিতে ৪০ থেকে ৫০ দিনের পর রোপনের উপযোগী হয়। বিশেষ করে শুকনো বীজতলার চারা উঠাতে গেলে গুচ্ছ শিকড়ের কোনো ক্ষতি হয়না, ফলে রোপনের অল্প দিনের মধ্যেই ভাল ফল দেখা যায়।