ঢাকা, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮ আশ্বিন ১৪৩০

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পানি সংকটে বোরো আবাদ বিঘ্নিত

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
🕐 ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩

পানি সংকটে বোরো আবাদ বিঘ্নিত

পানি শূন্যতায় থমকে পড়েছে সেচ ব্যবস্থা। আর সাথে আছে বীজ সংকট। এসব কারণে পটুয়াখালীর দুমকিতে বোরো চাষীরা বিপাকে পড়েছেন। নানামুখী সমস্যার কারণে কৃষকরা বোরো আবাদ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।

 

এলাকাবাসীরা জানান, ওয়াপদা বেষ্টিত উপজেলার আভ্যন্তরীণ নদীর পানি শুকিয়ে গেছে।ভরাট হওয়া খাল-বিল, পুকুর ডোবায় মারাত্মক পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে। সেচের পানির অভাবে বোরো আবাদ করতে পারছেন না অনেক চাষী।

পানির অভাবে শত শত হেক্টর ফসলি জমি অনাবাদী পড়ে আছে। প্রত্যন্ত এলাকার মাঠ, ঘাট ফসলি জমি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। মুরাদিয়ার মরা নদীর তীরবর্তি এলাকাগুলোতে সামান্য সেচের পানি পাওয়া গেলেও পর্যাপ্ত সেচ-যন্ত্রপাতির পাম্প, পাওয়ার টিলার এবং বীজ সংকটের কারণে কৃষকরা বোরো আবাদ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন।

শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা সেকান্দার আলী হাওলাদার বলেন, ‘পানির অভাবে বোরোর আবাদ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। সেচের পানির অভাব থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বোরোর আবাদ সম্ভব হচ্ছে না।

নদীর তীরবর্তী এলাকার জমি আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওই কৃষক জানান, ‘শুষ্কমৌসুমে মুরাদিয়া নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সেচের পানি মেলানো কষ্টকর। পাম্প সরবরাহ না পাওয়া গেলে নদীর তলা থেকে সেচের পানি ওঠানো অত্যন্ত দুরূহ। সে কারণেই এ অঞ্চলের কৃষকরা বোরো আবাদ নিয়ে মহাসংকটে পড়েছেন।’

চরবয়েড়া গ্রামের আবদুল জলিল মৃধা জানান, ‘এলাকার প্রায় সবগুলো খাল ভরাট হয়ে থাকায় পানি শূন্যতা বিরাজ করছে। সেচ সুবিধার অভাবে ওই গ্রামের কৃষকরা বোরো আবাদ করতে পারছেন না।’ একই অভিযোগ করেছেন পার্শ্ববর্তী আংগারিয়া ইউনিয়নের জলিশা গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ জিয়াউল হাসান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার অভ্যন্তরীণ ছোট-বড় খাল, নালা, দিঘি, পুকুর,ডোবার বেশিরভাগই পানি শূন্যতায় শুকিয়ে রয়েছে। পিরতলা, জলিশার কুন্ডমালা, আংগারিয়ার রুপাশিয়া ভাড়ানি, লেবুখালীর কচ্ছপিয়া, ফেদিয়া, গোদার খাল, কোহার-জোড়, ডাকাতিয়া, বয়ড়ার খাল, মুরাদিয়ার ঝড়ঝড়িয়াতলা, মহেশখালীসহ উল্লেখযোগ্য খালগুলি এখন ভরাট হয়ে অস্তিত্ব সংকটে আছে।

এসব খাল পৌষ মাসের শুরুতেই শুকিয়ে গেছে। ফলে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় সবখানেই সেচের পানির মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। শুধুমাত্র সেচের পানির অভাবেই প্রতিটি মৌসুমে ফসলের আবাদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।


চলতি বোরো আবাদের ভরা মৌসুম চললেও এ উপজেলায় শতকরা পাঁচ ভাগ কৃষকও বোরো আবাদ করতে পারেননি। ফলে সরকারি হিসেবের বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়া নিয়েও আছে শঙ্কা।

এ বিষয়ে দুমকি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহের মালিকা বলেন, প্রাকৃতিক পানির উৎস না থাকায় বোরোর আবাদ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে নদীর তীরবর্তী ও আলগি, চরগরবদি, লেবুখালীর চরাঞ্চলের কৃষকরা নিজস্ব উদ্যেগে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু কিছু জমিতে বোরো আবাদ করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

ওই সব চরাঞ্চলে অনেকের চারা রোপণের কাজ এখনও চলছে বলেও জানিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে শতাধিক হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। এজন্য বিএডিসির কাছে কয়েকটি পাম্প রিকুইজিশন দেওয়া হয়েছে।

 
Electronic Paper