ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চারিদিকে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৩

চারিদিকে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি

যত দূর চোখ যায় শুধুই হলুদের সমারোহ। দূর থেকে দেখলে মনে হবে হলুদের গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে এলে চোখে পড়ে হাজারো সূর্যমুখী ফুল। এমন দৃশ্য দেখা যায় ফরিদপুর সদর উপজেলার ডোমরাকান্দি এলাকায়। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ডোমরাকান্দি বিএডিসি (বীজ) খামারের মাঠজুড়ে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে সূর্যমুখীর হাসি।

 

এমন সৌন্দর্য দেখতে দূর-দুরান্ত থেকে হাজারো মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছে সূর্যমুখী বাগানে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব বয়সী মানুষেরা ছুটে আসছেন সূর্যমুখী ফুল বাগানে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

ফলে সূর্যমুখী ফুল বাগানের খবর ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সী মানুষ ভিড় করছে এ ফুল বাগানে। ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষের মিলনমেলায় পরিনত হচ্ছে বিএডিসির এ ফুল বাগানে।

ফরিদপুর শহরের পূর্বখাবাসপুর মহল্লার খায়রুজ্জামান পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছেন এ ফুল বাগানে। তিনি জানান, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য দেখতে এসেছেন। এসে তার খুবই ভালো লেগেছে।

ছবি তুলেছেন, ভিডিও করে তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। মাগুড়া জেলার শ্রীপুর থেকে সূর্যমুখীর বাগান দেখতে এসেছেন অলোক সেন নামের এক মোটর পার্টস ব্যবসায়ী।

তিনি বলেন, ফেসবুকে তিনি এ বাগানের ভিডিও দেখেছেন। একসাথে হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুল তিনি কখনো দেখেননি। তাই এখানে ছুটে এসেছেন। শহরের পশ্চিম আলীপুর মহল্লার মাজেদ মিয়া তার ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে এ বাগানে এসেছেন। সূর্যমুখী ফুলের সাথে ছবি তুলতে পেরে দারুন খুশি তারা।

অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবারে সূর্যমুখী ফুল দেখতে লোক সমাগম বেশী হয়। ফলে অনেক সময় বিএডিসি কর্তৃক নিযুক্ত ব্যক্তিদের লোকজনকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। অনেকেই বাগানে ঢুকে ফুল ও গাছ নষ্ট করে ফেলে। কেউ কেউ ফুলের ছবি তোলার জন্য তা ছিড়েও ফেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে বিএডিসির এ খামারে চাষ করা হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের। সূর্যমুখী চাষের আবাদ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে বিএডিসি। ক্যান্সার, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রক সূর্যমুখীর রয়েছে নানা পুষ্টিগুন।

এজন্য দিনকে দিন ফরিদপুরে সূর্যমুখী তেলের চাহিদাও বাড়ছে। সূর্যমুখী তেলের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখেই এ জেলায় বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ। বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চার একর জমিতে রোপন করা হয়েছে সূর্যমুখী ফুলের।

এখান থেকে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ মন সূর্যমুখীর বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এই বীজ সারাদেশে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) উপ সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান স্বপন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সূর্যমুখী তেলের পুষ্টির শেষ নেই। তাই এ তেলের চাহিদাও বাড়ছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই বাড়ানো হচ্ছে সূর্যমুখীর আবাদ।

সারাদেশের কৃষকদের মাঝে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করছি। সূর্যমুখীর বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে। তাছাড়া সূর্যমুখীর আবাদে নানা রকম কারিগরী সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ফরিদপুর জেলায় ৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

 
Electronic Paper