ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বগুড়ায় লাভজনক হওয়ায় বেড়েছে ভুট্টার চাষ

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ১১:০২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩

বগুড়ায় লাভজনক হওয়ায় বেড়েছে ভুট্টার চাষ

লাভজনক হওয়ায় বগুড়ায় বেড়েছ ভুট্টার চাষ। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছে কৃষকরা। ভুট্টা চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে জেলার কৃষকরা। লাভজনক হওয়ায় কৃষক ভুট্টা উৎপাদনে ঝুঁকে পড়েছেন। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলা কৃষি প্রধান এলাকা। কৃষির জন্য আদর্শ বলে ধান, পাট, সরিষাসহ সকল ফসল ফলে থাকে। অন্যান্য ফসলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বগুড়ায় রেকর্ড পরিমাণ ভুট্টার চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ জামিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।

 

গত বছর জেলায় ৭ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছিল। এ বছর জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্র ৮ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে। এ হিসেবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮৯ হাজার ৬৮৮ মেট্রিক টন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ভুট্টা চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৬ হেক্টর জমিতে। কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন, এবার ১ লাখ ২২ হাজার ৫২৩ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হবে।

জানা যায়, বগুড়া সদর, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ, কাহালু, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া, শাজাহানপুর উপজেলায় ভুট্টার চাষ করা হয়েছে। তবে জেলার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার যমুনা ও বাঙালি নদীর চরে শতশত একর জমিতে এবার ভুট্টার বীজ বপন করা হয়েছে।

কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় উপজেলাগুলোতে ভুট্টার চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় আগাম ভুট্টা চাষেও ঝুঁকছেন চাষিরা। লাভজনক এই ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে জেলা কৃষি অধিদপ্তর কৃষকদের সার বীজ ও কৃষি পুনর্বাসনসহ পরামর্শ সহায়তা দিয়ে কৃষকদের উৎসাহী করছে। এর ফলে দিন দিন কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে ভুট্টা চাষে।

আত্রাইয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ভুট্টার চাষ

মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি মাছ, হাঁস-মুরগি ও গো-খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এর চাহিদাও বেড়েছে অনেক বেশি। ভুট্টা গাছের পাতা সুষম গো-খাদ্য এবং কাণ্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফলে একদিকে যেমন কৃষক তার গবাদি পশু পালন ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারে, অপরদিকে বাজারে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষক এ ফসলে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলার ভুট্টাচাষি ফজলুল হক জানান, এবার সাড়ে চার একর জমিতে তিনি আগাম ভুট্টার আবাদ করেছেন। আগাম ভুট্টা চাষে রোগ বালাই কম হয়। ভুট্টার বিশেষ চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাওয়া যায়।

সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে জমিতে ভুট্টার বীজ বপন করা হয়। ৪-৫ মাসের মধ্যেই ঘরে চলে আসে ভুট্টা। বীজ, সার, পানি, জমি প্রস্তুত লাগানো, শ্রমিক মজুরি, কাটা-মাড়াইসহ প্রতি বিঘায় তাদের খরচ হয় সর্বোচ্চ ১০-১২ হাজার টাকা। ভুট্টা বিঘাতে গড়ে ৪০-৪৫ মণ হয়। বাজারে ভুট্টার অনেক চাহিদা আর দামও মোটামুটি ভালো।

শাজাহানপুর উপজেলার ডেমাজানি গ্রামের কৃষক ফরিদ উদ্দিন জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবার অনেক আগে ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ধান কাটার পর মাটি প্রস্তুত করে সেই জমিতে আগাম ভুট্টা চাষ করছি।

সব দিক বিবেচনা করে আগাম ভুট্টা চাষে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে এলাকার কৃষকদের।

তিনি আরো জানান, ভুট্টা চাষে জমিতে পানি সেচ কম লাগে এবং ফলনও অন্য ফসলের তুলনায় বেশি হয়। ফলে ধান আবাদের চেয়ে ভুট্টার চাষে অধিক আগ্রহ আমার।

ভোলায় ভুট্টার চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে - rfn24

ভুট্টা মাছ ও মুরগির খাবার হিসেবে ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। তাছাড়া ভুট্টা বাজারে বিক্রি করার পরও এর শুকনো গাছ ও মোচা বাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচলক এনামুল হক জানান, আলুর চাইতে ভুট্টা চাষ লাভজনক। পরিশ্রম কম ও উৎপাদন খরচও কম, তাই বগুড়ার কৃষকরা কম খরচে বেশি লাভবান হওয়া ভুট্টাকে বেছে নিয়েছে।

গত বছর প্রতি মণ ভুট্টা বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা মণ। বিঘাতে ৪০-৪৫ মণ পর্যন্ত ভুট্টা উৎপাদন হয়ে থাকে। এ বছর জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল ৮ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে।

এ হিসাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮৯ হাজার ৬৮৮ মেট্রিক টন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ভুট্টা চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৬ হেক্টর জমিতে। আমরা আশা করছি এবার বগুড়ায় ১ লাখ ২২ হাজার ৫২৩ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হবে।

 
Electronic Paper