ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তাড়াশে অপরিকল্পিত পুকুর খনন, খেসারত দিচ্ছে কৃষক

আশরাফুল ইসলাম রনি, তাড়াশ
🕐 ২:৫৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৫, ২০২২

তাড়াশে অপরিকল্পিত পুকুর খনন, খেসারত দিচ্ছে কৃষক

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অপরিকল্পিতভাবে রাতদিনে অবাধে যত্রতত্র পুকুর খননে খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ কৃষককে। ফসলি জমির মাঝে পুকুর থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই আশপাশের জমিগুলোতে জলাবদ্ধ হয়ে চাষাবাদে বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব জমির অধিকাংশই ৬/৭ মাস পানির নিচে থাকে। ফলে বছরের দুটি আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। আবার কোন কোন জমি জলাবদ্ধ হয়ে সারা বছরই পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে।

 

এতে বছরে ২০ থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধান, ১২-১৫ হাজার মেট্রিক টন সরিষাসহ হাজার হাজার মেট্রিক টন সবজির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলায় অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের ফলে ৮৬৫ একর ফসলি জমি জলাবদ্ধতায় রয়েছে।

বাস্তবে এর দ্বীগুন হবে বলে জানান কৃষকেরা। তাড়াশ সদর ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের কৃষক মনসুর রহমান বলেন, আমার জমির ধান কাটতে গিয়ে হতবাগ হয়ে পড়েছি! দুই বিঘা জমি আবাদে আমার ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এখান থেকে ধান উৎপাদন হতো ৫০ থেকে ৫৫ মণ।

কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে অর্ধেকেরও বেশি ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিঘা প্রতি সর্বোচ্চ ১০/১২ মণের বেশি ধান পাওয়া যাবে না। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে এলাকার কৃষকদের কাছে জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন শুরু করেন।

একে একে এই মাঠে বিভিন্ন মাঠে শতশত বিঘা জমি কেটে পুকুর খনন চলছে রাতদিন সমানতালে। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও উপজেলার কাউরাইল,তাড়াশ পশ্চিম মাঠ, সোলাপাড়া,ভায়াট, খুটিগাছাসহ প্রায় ১৫/২০টি স্থানে পুকুর খনন চলছে।

অপরদিকে পুকুর খনন করার ফলে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাধবপুর, সান্তান, মথুরাপুর, বিদি মাগুড়া ও শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় প্রায় এক হাজার বিঘা জমি পানির নিচে রয়েছে। বর্ষা পেরিয়ে শীত এলেও এসব জমিতে এখনো হাঁটু পানি রয়েছে।

পুরো মাঠ কচুরিপানাসহ জলজ উদ্ভিতে ভরে রয়েছে। একই অবস্থা মাধাইনগরের সরাপপুর ও ঝুরঝুরি এলাকায়ও। এখানে সারা বছরই জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ হয় না বললেই চলে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, যত্রতত্র পুকুর খননের ফলে তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চাষাবাদে ব্যাঘাত ঘটছে।

পুকুর খননের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ারটা আমাদের নেই। তবে অভিযোগ পেলেই উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হবে।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে বেশ কিছু জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলেই আমরা ক্যানেলের মাধ্যমে পানি নিস্কাশন করে দিচ্ছি।

 
Electronic Paper