ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

পীরগঞ্জে গাছে গাছে ঝুলছে পাকা কমলা

বাদল হোসেন, পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও)
🕐 ৩:৪০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৩, ২০২২

পীরগঞ্জে গাছে গাছে ঝুলছে পাকা কমলা

 

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার মালঞ্চা গ্রামের “অরেঞ্জ ভ্যালি’র” দার্জিলিং জাতের কমলা গাছের ডালে ডালে এবারও থোকায় থোকায় ঝুলছে বড় বড় হলুদ রঙের কমলা। কমলার ভারে হেলে পড়েছে গাছের ডালপালা। নয়নাভিরাম বাগানটি দেখে মনে হচ্ছে এটি ভারতের দার্জিলিংয়ের কোন এক কমলার বাগান। এ বাগান দেখতে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা সহ দুর দরান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করেছে।


গত বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কমলা তোলা শুরু করেছেন বাগান মালিক। মিষ্টি এবং রসালো এ কমলা বাগানেই বিক্রি হচ্ছে ৩’শ টাকা কেজি দরে। বাগান থেকে এবার ৩০ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা বাগান মালিকের।

উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আড়াই বিঘা জমির ওপরে ভারতীয় দার্জিলিং জাতের আড়াইশ গাছের কমলার বাগান করেছেন বীরহলি গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আবু জাহিদ ইবনুণ ইকরাম জুয়েল। অষ্টমবারের মতো এবারও প্রচুর কমলা ধরেছে গাছগুলোতে।

কমলার রঙও এসেছে বেশ লোভনীয়। ১১ বছর আগে জেলা হর্টিকালচার থেকে প্রতি চারা ৫ টাকা করে ক্রয় করে আড়াইশ গাছ রোপন করেন জুয়েল। এখন সেই গাছ থেকে বাৎসরিক ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করছেন ওই কৃষি উদ্যোক্তা।

গত বছর এ বাগান থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছিলেন তিনি। স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সরবরাহ করেছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাগানে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। দর্শনার্থীদের ভীড় সামলাতে এবার আগে ভাগেই বাড়তি ব্যবস্থা নিয়ে কমলা বাগানে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করেছেন বাগান মালিক।

তার পরেও ভীড় সামাল দিতে মালিক সহ ৮ জনকে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বাগানের নিরাপত্তার জন্য ইতোমধ্যে বাগানের চারিপাশ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও বাগানের ভিতরে কিছু গরম কাপড় বিক্রিরও ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে।

দর্শনার্থীরা কমলা বাগান দেখতে এসে বাগানের সৌন্দর্য অবলোকন করার পাশাপশি স্বল্প মুল্যে পরিবারের জন্য গরম কাপড়ও কিনতে পারবেন। উদ্যোক্তা জুয়েল জানান, তার বাগানটি দার্জিলিং জাতের কমলা বাগান। এ বাগানের কমলা
স্বাদে দার্জিলিংয়ের কমলার মত।

অর্গানিক পদ্ধিতিতে তিনি এ বাগান করেছেন। বাগানের আড়াইশ’ গাছ থেকে এবার ৩শ’ মন কমলা হতে পারে বলে আশা তার। আড়াই বিঘার এ বাগানে তার খরচ হয় চার লাখ টাকা। ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলা গাছ ৫০ বছর পর্যন্ত ফল দেয়।

এটি একটি অর্থকরি ফসল, যা খুব সহজে ও স্বল্প খরচে উৎপাদন করা যায় বলে জানান তিনি। কেউ যদি এমন বাগান করতে চায়, তাহলে তার পক্ষ থেকে কমলা চাষ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলেও জানান সফল এ উদ্যোক্তা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ বাগানের কমলা খুবই সুস্বাদু ও ভালো। তাই এ বাগানের কমলা দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায় এবং সকল জায়গায় আমাদের দেশে উৎপাদিত কমলা হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে। তাছাড়া এটা একটা পর্যটন শিল্প হিসেবেও কাজ করছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির জানান, জুয়েলের কমলা বাগান একটি পরিচিত নাম ও ব্রান্ড। জুয়েলের মত কেউ এমন কমলা বাগান করতে চাইলে তাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।

 
Electronic Paper