ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

গোয়ালন্দে পানি সংকটে বিপাকে পাট চাষিরা

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
🕐 ২:৫৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২২

গোয়ালন্দে পানি সংকটে বিপাকে পাট চাষিরা

শ্রাবন মাসে প্রতিবছরই কম বেশি বৃষ্টি হয়। কিন্তু এবার রাজবাড়ীর জেলায় রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে প্রকৃতি। মাঠ শুকিয়ে চৌচির। আষাঢ় মাস শেষে শ্রাবণ মাস শুরু হলেও তপ্ত রোদে পুড়ছে পুরো জেলা। চৈত্র কিংবা জ্যৈষ্ঠের ছদ্মবেশে পুড়িয়ে চলছে চারদিক। টানা তাপপ্রবাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যেন একেবারেই অচল হয়ে পড়েছে। প্রকৃতির এমন খরায় মনে হচ্ছে- শ্রাবণের শুরু নয়; যেন মধ্য জ্যৈষ্ঠের অগ্নিমূর্তি। একারণে পদ্মা পাড়ের গোয়ালন্দ উপজেলায় পাট কেটে তা জাগ দেয়া নিয়ে এই অঞ্চলের কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে বৃষ্টির দেখা না মিললে শত শত হেক্টর জমিতে পাটের বাম্পার ফলন হওয়া সত্ত্বেও জাগ দিতে না পারায় চাষিদের চরম লোকসান গুনতে হবে।এবার গোয়ালন্দ উপজেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ৪হাজার ৬শ ৬০ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিনে আজ বুধবার (২০ জুলাই) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ খাল, বিল, ডোবা এবং জলাশয়ে পানি নেই। যেটুকু পানি আছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে পাট চাষিরা বৃষ্টির আশায় পাট কেটে জমিতে ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছে। এতে পাট জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে।

আবার কেউ ঘোড়ার গাড়ি,ভ্যানে করে বিল অথবা মরা পদ্মা নদীতে নিয়ে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার বাড়ি বা সড়কের পাশের ডোবা,খাল ও জলাশয়ের অল্প পানিতেই পাট পচানোর জন্য জাগ দিচ্ছেন। অল্প পানিতে পাট জাগ দেওয়ার কারনে পাটের আশ কালো হয়ে যাচ্ছে।

পাট আবাদের শুরুতে বৃষ্টি পানিতে নিচু জমির কিছু পাট তলিয়ে নষ্ট হয়। এখন আবার অনাবৃষ্টি আর টানা খরার কারণে পাট জাগ দেওয়ার পানি পাচ্ছেন না কৃষকেরা। তবে হাট বাজারে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি রয়েছে।

উপজেলার উজানচর ইউনিয়নে রিয়াজ উদ্দিনের পাড়া গ্রামের কৃষক রমিজ মোল্লাকে দেখা যায় নছিমনে করে কাচা পাট মরা পদ্মায় নিয়ে যাচ্ছেন তিনি বলেন, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি। ফলনও ভাল হয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। তাই ঘোড়ার গাড়িতে করে পাট এনে মরা পদ্মা নদীতে জাগ দিচ্ছি। হাটে পাটের দাম ও চাহিদা ভালো থাকায় একটু স্বস্তিতে রয়েছি।

দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ফকির পাড়া গ্রামের কৃষক আমজাদ ফকির বলেন, ৬ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছি। ডোবায় পানি না থাকায় পাট কেটে মাঠে ফেলে রেখেছি। রোদে পাট পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে এবার শ্রমিক সংকট রয়েছে। শ্রমিকের মজুরি ৭শত থেকে ৮শত টাকা। তার পরেও এলাকাতে পাট কাটার শ্রমিক পাওয়া যায় না। পাট আবাদ ভালো হলেও এখন পাট কাটা ও জাগ দেওয়া নিয়ে বিপদে পড়েছি।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খোকন উজ্জামান বলেন, এ মৌসুমে উপজেলায় ৪ হাজার ৬শত ৬০হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড রোদের কারনে ডোবা, নালে পানি না থাকায়, কৃষক পাট জাগ দিতে পারছে না। এতে কৃষক পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে। তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে এ সমস্যা দূর হবে বলে তিনি আশা করেন।

 
Electronic Paper